ব্যাংকে গচ্ছিত স্থায়ী আমানতের সনদ, নিবন্ধিত কোম্পানির শেয়ার সার্টিফিকেট, মেধাস্বত্ব পণ্য, সফটওয়্যার বা অ্যাপসের মতো অস্থাবর সম্পত্তির বিপরীতেও ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ পাওয়া যাবে।
এ লক্ষ্যে ‘সুরক্ষিত লেনদেন (অস্থাবর সম্পত্তি) আইন, ২০২৩’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বৃহস্পতিবার শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
সচিব বলেন, ‘আমাদের ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত স্থাবর সম্পত্তির ভিত্তিতে ঋণ দিয়ে থাকে। আমরা শুনেছি- আগে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান শেয়ার বা এফডিআরের বিপরীতে ঋণ দিত। এর আইনগত কোনো ভিত্তি ছিল না। এখন এর আইনগত ভিত্তি দেওয়া হলো।’
তবে যে অস্থাবর সম্পত্তির বিপরীতে ঋণ নেওয়া হবে, সেই অস্থাবর সম্পত্তি আগে নিবন্ধন করতে হবে। এ জন্য একটি অথোরিটিও হবে। সেখান থেকে নিবন্ধন নিয়ে যেকোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেওয়া যাবে বলে জানান মাহবুব হোসেন।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘মূলত যারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, বিশেষ করে যারা আইসিটি দিয়ে ব্যবসা করেন, যাদের একটা অ্যাপস আছে, একটা সফটওয়্যার আছে কিংবা কোনো একটা বিষয়ে মেধাস্বত্ব আছে, সেগুলোকে নিবন্ধন অথোরিটি থেকে বাজার দরে মূল্যায়ন করে ব্যাংক ব্যবস্থায় এক্সেস তৈরি (ঋণ নেওয়া) হবে।’
তিনি জানান, মেধাস্বত্বসহ ১৬টি অস্থাবর সম্পত্তি জামানত রেখে ঋণ নেওয়া যাবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো- ক. ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে গচ্ছিত স্থায়ী আমানতের সনদ। খ. সোনা-রুপা ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতু যার ওজন ও বিশুদ্ধতার মান স্বীকৃত কর্তৃপক্ষ দ্বারা সত্যায়িত।
গ. নিবন্ধিত কোম্পানির শেয়ার সার্টিফিকেট। ঘ. মেধাস্বত্ব অধিকার দ্বারা স্বীকৃত মেধাস্বত্ব পণ্য, আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক পণ্য, সফটওয়্যার বা অ্যাপস যার মূল্য অনুধাবন করা সম্ভব। ঙ. যথাযথ কর্তৃপক্ষ দ্বারা নিবন্ধিত যান্ত্রিক বা অযান্ত্রিক যানবাহন। চ. যথাযথ সংরক্ষিত কৃষিজাত পণ্য, প্রক্রিয়াজাত মৎস্য বা জলজ প্রাণী ও বন্যপ্রাণী। ছ. উভচর-প্রাণী ছাড়া আয়বর্ধক জীবজন্তু। জ. সুরক্ষার স্বার্থ স্বীকৃত যেকোনো চুক্তি বন্ধক সাপেক্ষে বিক্রয় ডিবেঞ্চার। ঝ. যেকোনো চাষ বা কিস্তিতে ক্রয় চুক্তি, বিধি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এক বছরের অধিক মেয়াদি কোনো ইজারা। ঞ. সড়ক পরিবহন আইন দ্বারা নিবন্ধিত কোনো মোটরযান বা জামিনদারের দখলে থাকা পণ্যের ওপর সৃষ্ট সুরক্ষা স্বার্থ এবং ট. কোনো বার্ষিক ভাতা বা বিমা পলিসির অধীনে সৃষ্ট কোনো স্বার্থ বা দাবি বা জামানতের ক্ষয়ক্ষতি পূরণের নিশ্চয়তা হিসেবে কোনো বিমা পলিসির অধীনে প্রাপ্য অর্থ।
এ ছাড়া বৈঠকে ‘বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথোরিটি আইন ২০২৩’ এবং ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) আইন ২০২৩ ’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মাহবুব হোসেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।